১২ বছরেই মেয়েদের বিয়ে উপযুক্ত? মুফতি কাসেমীর মন্তব্যে তোলপাড় - Ak Freelancing Park
Notification texts go here Contact Us Download Now!

১২ বছরেই মেয়েদের বিয়ে উপযুক্ত? মুফতি কাসেমীর মন্তব্যে তোলপাড়

মেয়েদের ১২ থেকে ১৩ বছর বয়সেই বিয়ের উপযুক্ত সময় বলে মন্তব্য করেছেন মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমী। তার বক্তব্য ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে চলছে তীব্র বিতর্ক।
AKFP
Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated
১২ বছরেই মেয়েদের বিয়ে উপযুক্ত? মুফতি কাসেমীর মন্তব্যে তোলপাড়
১২-১৩ বছরেই বিয়ের পক্ষে মন্তব্যে বিতর্কে মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমী-
মেয়েদের ১২ থেকে ১৩ বছর বয়সেই বিয়ের উপযুক্ত সময় বলে মন্তব্য করেছেন মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমী। তার বক্তব্য ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে চলছে তীব্র বিতর্ক। জানুন বিস্তারিত ও বাংলাদেশের প্রচলিত আইন কী বলছে।



শরীয়াহ ভিত্তিক ‘আইডিয়াল ম্যারেজ ব্যুরো’র প্রতিষ্ঠাতা মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমী সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট দিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন।

তিনি দাবি করেছেন, ১২ থেকে ১৩ বছরই নারীদের বিয়ের “পারফেক্ট বয়স”, এবং যারা এই বয়সে বিয়ের বিরোধিতা করেন, তারা মুসলিম হতে পারেন না।

২০২৫ সালের ২২ অক্টোবর (বুধবার) নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে কাসেমী লেখেন, “যারা ১২/১৩ বছরের নারীকে ছোট বলে বিবাহে আপত্তি জানায়, তারা ইসলাম বুঝে না বা অমুসলিমদের ভাষ্য অনুসরণ করে। ইসলামে ১৩ বছরকে ছোট বলা হয় না; বরং এটি নারীদের বিবাহের পারফেক্ট বয়স।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “রাসূল (সা.) এটাই আদেশ করেছেন। ১২/১৩ বছরের মেয়েদের বিয়ে নিয়ে কটুক্তি করতে পারে অমুসলিমরা, মুসলমানরা নয়।”

সামাজিক প্রতিক্রিয়া:
এই বক্তব্য প্রকাশের পর কাসেমীর ফেসবুক পোস্টের কমেন্ট সেকশনে দেখা যায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ও বিভাজন। অনেকে তার বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন, কেউ কেউ তার পেজে ট্যাগ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে কিছু অনুসারী তার বক্তব্যকে ধর্মীয় ব্যাখ্যা হিসেবে সমর্থন করেছেন।

এই আলোচনায় একদিকে ধর্মীয় মতামত, অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় আইন ও মানবাধিকার নীতিমালা-এই দুই দিক নিয়ে তর্ক-বিতর্কে ভরে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।

অতীত বিতর্ক ও অভিযোগ:
উল্লেখ্য, মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমী এর আগেও নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। তার তৃতীয় স্ত্রী পূর্বে তার বিরুদ্ধে গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগ এনেছিলেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ায় ১৩ বছরের একটি মেয়েকে বিয়ে করার অভিযোগও উঠেছিল। এই ঘটনার পরপরই তিনি নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে ফেসবুকে উক্ত পোস্টটি দেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।




বাংলাদেশের আইনি বাস্তবতা:
বাংলাদেশের প্রচলিত বিয়ের আইন অনুযায়ী, কোনো মেয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর এবং ছেলের ন্যূনতম বয়স ২১ বছর হতে হবে। এই বয়সসীমার নিচে কাউকে বিয়ে দেওয়া হলে সেটি আইনত শিশু বিবাহ হিসেবে গণ্য হয়। এই ধরনের বিয়েতে মেয়ের বা ছেলের অভিভাবক, কাজি কিংবা বিয়ে পরিচালনায় জড়িত যেকোনো ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হতে পারেন।

এমনকি যদি ছেলের বয়স ২১ বছর পূর্ণও হয়, কিন্তু মেয়ের বয়স ১৮ বছরের কম থাকে, তবুও ছেলেটি নিজে এবং সংশ্লিষ্ট অন্য সবাই আইনের আওতায় আসবেন।

বাংলাদেশে প্রচলিত শিশু বিবাহ নিরোধ আইন অনুযায়ী, এই অপরাধে সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে শিশু বিবাহ প্রতিরোধে সচেতনতা কার্যক্রম, সামাজিক প্রচারণা এবং স্থানীয় প্রশাসনের তদারকি জোরদার করা হয়েছে।

তবুও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সামাজিক, ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক কারণেই এখনো অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়, যা আইনত সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।

বিতর্কের কারণ কী?
১. ধর্ম বনাম রাষ্ট্রীয় আইন:
ধর্মীয় ব্যাখ্যা ও রাষ্ট্রীয় আইন প্রায়ই একে অপরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় না। ইসলামিক ব্যাখ্যায় শারীরিক পরিপক্বতা বিবাহের মানদণ্ড হতে পারে, কিন্তু রাষ্ট্রীয় আইনে বয়স নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

২. শিশু বিবাহের সামাজিক প্রভাব:
অল্প বয়সে বিয়ে নারীদের শিক্ষা, মানসিক বিকাশ ও শারীরিক স্বাস্থ্যে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি ডেকে আনে।

৩. সামাজিক প্রতিক্রিয়া:
অনেকে মনে করেন, এই ধরনের বক্তব্য শিশু বিবাহকে উৎসাহিত করতে পারে, যা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও মানবাধিকার অগ্রগতির জন্য হুমকি।

উপসংহার:
বাংলাদেশের সমাজ ও আইন অনুযায়ী, ১৮ বছরের আগে কোনো মেয়ের বিয়ে বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ। ধর্মীয় ব্যাখ্যা বা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, বাস্তবিক দিক থেকে শিশু বিবাহ নারীদের ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর।

একটি সভ্য সমাজে ধর্মীয় ব্যাখ্যা, সামাজিক বাস্তবতা এবং আইনি কাঠামোর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও স্পষ্ট হয়েছে - শিশুবিবাহ রোধে সচেতনতা ও আইনের প্রয়োগ আরও জোরদার করা প্রয়োজন।

FAQ:
প্রশ্ন ১: ইসলামে কি বিয়ের নির্দিষ্ট বয়স বলা আছে?
উত্তর: ইসলাম বয়স নয়, বরং শারীরিক ও মানসিক পরিপক্বতাকে বিবেচনা করে। তবে আধুনিক রাষ্ট্রগুলো সমাজের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য নির্দিষ্ট বয়স নির্ধারণ করেছে।

প্রশ্ন ২: ১৮ বছরের নিচে বিয়ে দিলে কী শাস্তি হতে পারে?
উত্তর: শিশুবিবাহ নিরোধ আইনে অভিভাবক, কাজি বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও জরিমানা হতে পারে।

প্রশ্ন ৩: শিশুবিবাহ রোধে কী করণীয়?
উত্তর: সচেতনতা বৃদ্ধি, মেয়েদের শিক্ষা নিশ্চিত করা, এবং আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক সমর্থন বাড়ানো প্রয়োজন।



পোষ্ট ট্যাগ:
মামুনুর রশিদ কাসেমী, ১২ বছর বয়সে বিয়ে, শিশু বিবাহ আইন বাংলাদেশ, আইডিয়াল ম্যারেজ ব্যুরো, ইসলামিক বিয়ে বিতর্ক, মেয়েদের বিয়ের বয়স, বাংলাদেশে বিয়ের আইন, কাসেমীর ফেসবুক পোস্ট, মুফতি কাসেমী বিতর্ক

Post a Comment

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.