ফরিদপুর জেলার সেরা আবাসিক হোটেল, রিসোর্ট ও সরকারি গেস্ট হাউজের বিস্তারিত ঠিকানা, সুবিধা, রুম ক্যাপাসিটি ও যোগাযোগ নম্বরসহ সম্পূর্ণ গাইড। ভ্রমণ, চিকিৎসা বা অফিসিয়াল কাজে ফরিদপুরে কোথায় থাকবেন-এখানে পাবেন নির্ভুল তথ্য।
ফরিদপুর জেলার আবাসিক হোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউজ: সম্পূর্ণ ও আপডেটেড গাইড
ফরিদপুর বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা, যা শীঘ্রই পূর্ণাঙ্গ বিভাগে উন্নীত হওয়ার অপেক্ষায়। পদ্মাপাড়ের এই জেলার ৯টি উপজেলা জুড়ে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী মসজিদ, দিঘি, জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, সুফিবাদী স্থাপনা এবং প্রাকৃতিক সুন্দর সব জায়গা।
ফরিদপুরে প্রতিদিনই চিকিৎসা, শিক্ষা, ব্যবসা, ভ্রমণ ও সরকারি কাজে হাজারো মানুষ আসে। আর তাদের বেশিরভাগই রাত্রীযাপনের জন্য খোঁজ করেন নির্ভরযোগ্য আবাসিক হোটেল বা গেস্ট হাউজ।
এই আর্টিকেলে ফরিদপুর সদর ও আশেপাশের সবচেয়ে পরিচিত এবং ব্যবহৃত আবাসিক হোটেল, রিসোর্ট ও সরকারি গেস্ট হাউজের সত্য ও নিশ্চিত তথ্য তুলে ধরা হলো। ভবিষ্যতে নতুন হোটেলের তথ্য যোগ করা হবে।
ফরিদপুর সদর ও আশেপাশের আবাসিক হোটেলসমূহ:
ফরিদপুর শহর মূলত মুজিব সড়ক, গোয়ালচামট, আলীপুর, ভাঙ্গা রোড কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। বেশিরভাগ হোটেল এই এলাকাগুলোতেই অবস্থিত। প্রতিটি হোটেলই আলাদা সুবিধা ও রুম সুবিধা প্রদান করে থাকে।
১. হোটেল র্যাফেল ইনস:
ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট এলাকায় এটি একটি পরিচিত আবাসিক হোটেল। মাঝারি বাজেটে থাকার জন্য এটি ভিজিটরদের কাছে জনপ্রিয়।
a. রুম সংখ্যা প্রায় ৩২টি।
b. পরিবার, সলো ট্রাভেলার ও অফিস স্টাফদের থাকার জন্য উপযোগী।
c. শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সহজে যাতায়াত সুবিধা রয়েছে।
☎️ ০৬৩১-৬১১০৬
২. হোটেল পদ্মা:
মুজিব সড়কে অবস্থিত এই হোটেলটি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় ও বাইরের ভ্রমণকারীদের আস্থার জায়গা।
a. প্রায় ৪৫টি রুম রয়েছে।
b. পরিবেশ শান্ত ও নিরাপদ।
c. শহরের মূল কেন্দ্র হওয়ায় মার্কেট, হাসপাতাল, খাবারের দোকান কাছে পাওয়া যায়।
☎️ ০৬৩১-৬২৬৮৫
৩. হোটেল লাক্সারী:
গোয়ালচামট এলাকায় অবস্থিত এই হোটেলটি পরিচ্ছন্নতা ও নরমাল বাজেটের জন্য উপযোগী।
a. ৩২টি রুম।
b. অফিসিয়াল ট্রিপ, চিকিৎসা সেবা নেওয়া রোগী-স্বজনদের জন্য সুবিধাজনক।
☎️ ০৬৩১-৬২৬২৩
৪. হোটেল পার্ক প্যালেস:
হাজী শরীয়তুল্লাহ বাজার সংলগ্ন এলাকায় এই হোটেলটির চাহিদা বেশ ভালো।
a. প্রায় ৩৮টি রুম।
b. পরিবার নিয়ে থাকার জন্য আরামদায়ক পরিবেশ।
c. বাজার, খাবার দোকান ও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত।
☎️ ০১৫৫৬৩২৭০৬৭
৫. হোটেল শ্যামলী:
মুজিব সড়কে এটি একটি ছোট কিন্তু পরিচিত হোটেল।
a. মাত্র ১৩টি রুম আছে, তাই ভিড়ের মধ্যে রুম পেতে হলে আগে থেকে যোগাযোগ করা ভালো।
b. বাজেট খুব কম হলে এটি ভালো অপশন হতে পারে।
☎️ ০১৭২৫০৬৮৭৮৮
৬. হোটেল জোনাকী:
ফরিদপুরের অন্যতম পুরনো এবং মাঝারি মানের হোটেল হিসেবে পরিচিত।
a. প্রায় ৪০টি কক্ষ রয়েছে।
b. নিরাপত্তা ও সার্ভিস ভালো।
☎️ ০১৭৭৭১০৫৯০৪
৭. রাজ বোডিং:
গোয়ালচামট এলাকায় থাকা সাশ্রয়ী বোর্ডিংগুলোর মধ্যে রাজ বোডিং জনপ্রিয়।
a. ৩৭টি রুম।
b. ছাত্র, চাকরিপ্রার্থী বা স্বল্প বাজেটের ভিজিটরদের জন্য ভালো অপশন।
☎️ ০১৭২৫০৬৮৭৮৮
৮. হোটেল রাজস্থান:
ভাঙ্গা রাস্তামোড় এলাকায় অবস্থান হওয়ায় এটি বিশেষভাবে জনপ্রিয়।
a. ভাঙ্গামুখী যাত্রীদের জন্য সুবিধাজনক।
b. থাকার মান অনুযায়ী ভাড়া যুক্তিসঙ্গত।
☎️ ০১৯৪৯৫৮১৫৮২, ০১৭৭৮৫৭২২২১
৯. জে.কে ইন্টারন্যাশনাল:
নিলটুলী এলাকার একটি ব্যবসায়িক মানের আবাসিক হোটেল।
a. ভালো মানের রুম।
b. পরিবার বা বিজনেস ট্রাভেলারদের জন্য উপযোগী।
☎️ ০১৭০৮৮৮৭২২৬৬, ০১৭৫৬৯০০৪০৯
১০. হোটেল সাদিয়া ইন্টারন্যাশনাল:
আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন নতুন হোটেলগুলোর একটি।
a. স্ট্যান্ডার্ড থেকে ডিলাক্স রুম—বিভিন্ন অপশন রয়েছে।
b. পরিবার ও কর্পোরেট স্টে-এর জন্য নির্ভরযোগ্য।
☎️ ০১৭১৬৩০৩৩০৫
১১. হোটেল সোনারগাঁও:
মুজিব সড়কের একটি পরিচিত নাম।
a. পরিবারের জন্য নিরাপদ পরিবেশ।
b. অফিস ট্রাভেলারদের জন্য উপযুক্ত রুম সুবিধা রয়েছে।
☎️ ০১৭১২২৫২২৫৭
১২. হোটেল সুপার স্টার:
আলীপুর মোড়ের একটি মধ্যমানের হোটেল।
a. রুম ও সার্ভিস সাধারণত বাজেট-ফ্রেন্ডলি।
☎️ ০১৯১৩৪৫৫৭৯২
সরকারি ডাকবাংলো ও গেস্ট হাউজ:
সরকারি গেস্ট হাউজগুলো সাধারণত রিজার্ভেশন নিয়ে থাকা যায় এবং অফিসিয়াল কাজে আগতদের বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে।
১. আঞ্চলিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট গেস্ট হাউজ:
ভাঙ্গা এলাকায় এটি সরকারি অতিথিশালা।
a. পরিচ্ছন্ন ও আরামদায়ক পরিবেশ।
b. অফিসিয়াল ভিজিটের জন্য বিশেষভাবে ব্যবহৃত।
☎️ ০৬৩২৩-৫৬৩২৯
২. জেলা পরিষদ ডাকবাংলো – ভাঙ্গা:
ভাঙ্গা কোর্টপাড়া এলাকায় অবস্থিত এই ডাকবাংলোটি সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয়।
a. জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে রুম বুকিং করা যায়।
৩. জেলা পরিষদ ডাকবাংলো – চরভদ্রাসন:
চরভদ্রাসন এলাকায় সরকারি আবাসনের একমাত্র কেন্দ্র।
a. পর্যটক, সরকারি কর্মকর্তা বা গবেষণামূলক কাজে আসা ব্যক্তিরা এখানকার রুম ব্যবহার করতে পারেন।
উপসংহার:
ফরিদপুর জেলা প্রতিদিনেই নতুন ভিজিটর পাচ্ছে—বিশেষ করে ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে চালুর পর ট্রাভেল আরও গতিশীল হয়েছে। নিরাপদ, সাশ্রয়ী এবং সুবিধাজনক হোটেল খুঁজে পাওয়ার জন্য এই তালিকা আপনাকে নিশ্চিতভাবেই সাহায্য করবে। ভবিষ্যতে নতুনভাবে খোলা হোটেল বা রিনোভেশনকৃত গেস্ট হাউজের তথ্য আপডেট করা হবে।
আপনার নিজের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কোন হোটেলটি সবচেয়ে ভালো মনে হয়েছে-তা জানালে আমাদের গাইড আরও সমৃদ্ধ হবে।
FAQ:
ফরিদপুরে সবচেয়ে নিরাপদ হোটেল কোনটি?
— পরিবার ও অফিসিয়াল স্টের জন্য হোটেল সাদিয়া ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল সোনারগাঁও এবং জে.কে ইন্টারন্যাশনাল যথেষ্ট নিরাপদ বলে ব্যবহারকারীরা মত দেন।
ফরিদপুরে কি অনলাইন বুকিং পাওয়া যায়?
— অনেক হোটেল ফোনে বুকিং নিশ্চিত করে। এখনও পূর্ণাঙ্গ অনলাইন বুকিং সিস্টেম বেশিরভাগ হোটেলে চালু হয়নি।
বাজেট ফ্রেন্ডলি হোটেল কোনগুলো?
— হোটেল শ্যামলী, রাজ বোডিং, হোটেল জোনাকী বাজেট ফ্রেন্ডলি হিসেবে পরিচিত।
সরকারি গেস্ট হাউজ কীভাবে বুক করবো?
— সংশ্লিষ্ট অফিসের নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে হয়।
পোস্ট ট্যাগ:
Faridpur hotel, ফরিদপুর হোটেল, Faridpur guest house, Faridpur resort, ফরিদপুর আবাসিক হোটেল, Faridpur travel guide, hotel booking Faridpur, ফরিদপুর জেলার হোটেল, Faridpur accommodation, ফরিদপুর গেস্ট হাউজ, ফরিদপুর কোথায় থাকবেন
