ঢাকায় সাম্প্রতিক ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের পর ভবনের ক্ষতি ও ঝুঁকি মূল্যায়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রকৌশল বিভাগ বিনামূল্যে স্ক্যান সেবা চালু করেছে। কী সেবা দিচ্ছে এবং কেন মূল্যায়ন জরুরি-জানুন বিস্তারিত।
সাম্প্রতিক ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। বেশ কিছু স্থাপনায় ফাটল, হেলে পড়া এবং অস্বাভাবিক কম্পনের ঘটনা সামনে আসার পর নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তা উদ্বেগ বেড়েছে। এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রকৌশল বিভাগ ভূমিকম্প পরবর্তী ভবন সুরক্ষা স্ক্যান সেবা চালুর ঘোষণা দিয়েছে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান তার অফিসিয়াল ফেসবুক আইডিতে প্রকাশিত পোস্টে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ভূমিকম্পের পর ভবন বা স্থাপনার ক্ষতি অনেক সময় চোখে পড়ে না, কিন্তু সামান্য ফাটলও পরবর্তী ধাপে বড় ঝুঁকির কারণ হতে পারে। তাই সন্দেহজনক যেকোনো পরিবর্তনকে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত বিশেষজ্ঞ পরীক্ষা করানো জরুরি।
ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সাধারণ লক্ষণ-আপনার বাসা বা প্রতিষ্ঠানে নিচের পরিবর্তনগুলো দেখা দিলে বিশেষজ্ঞ মূল্যায়ন জরুরিঃ
1. দৃশ্যমান ফাটল বা চিড়-দেয়াল, বিম বা পিলারে নতুন ফাটল।
2. হেলে যাওয়া বা বেঁকে যাওয়া-স্থাপনার সামগ্রিক অমিল বা অস্বাভাবিক ঢাল।
3. অস্বাভাবিক শব্দ-বাতাস, কম্পন বা নড়াচড়ার সাথে অচেনা শব্দ শোনা।
জামায়াতের প্রকৌশল বিভাগের সেবা:
সংগঠনটি যে সেবাগুলো প্রদান করছে-
1. প্রাথমিক ঝুঁকি মূল্যায়ন-স্থাপনার অবস্থা বিশ্লেষণ।
2. প্রয়োজন হলে সাইট ভিজিট-অভিজ্ঞ সিভিল ও স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারদের উপস্থিতি।
3. দৃশ্যমান ক্ষতির চিহ্ন নির্ণয়-ঝুঁকিপূর্ণ অংশ শনাক্তকরণ।
4. নিরাপত্তা নির্দেশনা-জরুরি করণীয়ের পরামর্শ।
5. ভিডিও ডকুমেন্টেশন ও প্রাথমিক রিপোর্ট-ফলাফল সংরক্ষণ।
6. এক্সপার্ট প্যানেল কর্তৃক ফাইনাল রিপোর্ট (প্রয়োজনে)-সম্পূর্ণ মূল্যায়নের সারসংক্ষেপ।
বর্তমানে এই সেবাটি ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ও আশপাশের এলাকায় সীমিত আকারে প্রদান করা হচ্ছে। আগ্রহীরা পোস্টে উল্লেখিত নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করতে পারবেন।
ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর মূল্যায়নের উদ্দেশ্য শুধু ক্ষতি শনাক্ত করা নয়, বরং ভবিষ্যৎ বড় বিপদ-যেমন হঠাৎ ধস-রোধ করা। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সামান্য ফাটলও সময়ের সাথে বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। তাই কোনো রকম পরিবর্তন চোখে পড়লেই অবহেলা না করে দ্রুত বিশেষজ্ঞ মতামত নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
উপসংহার:
ভূমিকম্পের পর ভবন-ঝুঁকি মূল্যায়ন এখন সময়ের দাবি। সাম্প্রতিক কম্পনের পর ঢাকায় বিভিন্ন স্থাপনায় ক্ষতির ঘটনা প্রমাণ করে যে দ্রুত পরীক্ষা মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষার একটি কার্যকর উপায়। জামায়াতের প্রকৌশল বিভাগের এই মূল্যায়ন সেবা নাগরিকদের উদ্বেগ কমাতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। সতর্ক থাকুন, নিরাপদ থাকুন-ঝুঁকি দেখলে অপেক্ষা না করে বিশেষজ্ঞের সহযোগিতা নিন।
FAQ:
১. ভূমিকম্পের পর ভবন পরীক্ষা কেন জরুরি?
কারণ সামান্য ফাটলও ভবিষ্যতে বড় ধরনের ঝুঁকির কারণ হতে পারে। ক্ষতি তাৎক্ষণিক বোঝা নাও যেতে পারে।
২. কারা এই সেবা দিচ্ছে?
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রকৌশল বিভাগ অভিজ্ঞ সিভিল ও স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারদের মাধ্যমে সেবা দিচ্ছে।
৩. এই সেবা কি সারা দেশে পাওয়া যাবে?
বর্তমানে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এবং নিকটবর্তী এলাকায় সীমিত আকারে দেওয়া হচ্ছে।
৪. কী ধরনের রিপোর্ট পাওয়া যাবে?
প্রাথমিক রিপোর্ট, ভিডিও ডকুমেন্টেশন এবং প্রয়োজন হলে এক্সপার্ট প্যানেলের ফাইনাল রিপোর্ট।
৫. ভবনের কোন লক্ষণ দেখলে জরুরি পরীক্ষা দরকার?
ফাটল, অস্বাভাবিক শব্দ, ভবন হেলে যাওয়া বা বেঁকে যাওয়ার মতো পরিবর্তন।
আজকের ভূমিকম্প: হঠাৎ কম্পন অনেকের জীবনে প্রথমবার এত তীব্রভাবে অনুভূত
পোস্ট ট্যাগ:
ভূমিকম্প পরবর্তী সেবা, ভবন ঝুঁকি মূল্যায়ন, জামায়াত প্রকৌশল বিভাগ, ভবন স্ক্যান, ঢাকা ভূমিকম্প খবর, স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার পরামর্শ, নিরাপত্তা মূল্যায়ন, বাংলাদেশ ভূমিকম্প আপডেট, বিল্ডিং ইনস্পেকশন, সেফটি চেক
