ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে একাধিক বিবাহের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করলেন আইডিয়াল ম্যারেজ ব্যুরোর কর্ণধার মামুনুর রশিদ কাশেমী-
মামুনুর রশিদ কাশেমীর মতে, ইসলামে একসাথে চার স্ত্রীর বেশি রাখা নিষিদ্ধ হলেও জীবনে একাধিক বিয়ে করা অন্যায় নয়। তিনি একাধিক বিবাহের ইসলামি দিক ও সামাজিক বাস্তবতা তুলে ধরেছেন।
আইডিয়াল ম্যারেজ ব্যুরোর কর্ণধার ও ইসলামী বক্তা মামুনুর রশিদ কাশেমী বলেছেন -“একসাথে ৪ স্ত্রীর বেশি রাখা বৈধ নয়, তবে জীবনে ৮-১০টি বিবাহ হওয়া কোনো অন্যায় নয়।” তার এই মন্তব্যে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা:
কাশেমী বলেন, নবীজী (সা.) এবং সাহাবাদের জীবনে বহু বিবাহ ও তালাকের ঘটনা ঘটেছে। এসব ছিল যৌক্তিক ও শরয়ীভাবে অনুমোদিত।
তিনি উল্লেখ করেন, “যদি কেউ ইনসাফ করে, তবে একাধিক স্ত্রী থাকা কোনো অন্যায় নয়; কিন্তু জুলুম করলে, সে এক স্ত্রীর হলেও অপরাধী।”
সামাজিক বাস্তবতা ও উদাহরণ:
তিনি জানান, বাংলাদেশের অনেক পুরুষ জীবনে একাধিকবার বিবাহ করেছেন। কারও স্ত্রী মারা গেছেন, কেউ তালাকপ্রাপ্ত হয়েছেন। ফলে অনেকের ৩–৪টি বিবাহ হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “বাস্তবে অনেকের জীবনে একাধিক বিবাহ ঘটে যৌক্তিক কারণেই, এটা লজ্জার কিছু নয়।”
নারী নির্যাতন প্রসঙ্গে মতামত:
কাশেমী স্পষ্ট করে বলেন- “যে স্বামী জালেম, সে এক স্ত্রীর প্রতিও জুলুম করে। আর যে আদেল, সে একাধিক স্ত্রীর প্রতিও ইনসাফ করে।” তিনি আরও জানান, দেশে লাখ লাখ নারী নির্যাতন মামলা চলমান, যেগুলোর অনেকই মিথ্যা।
তবে তিনি পুরুষদের সতর্ক করে বলেন- “যারা একাধিক বিয়ে করেছেন, তাদেরও ইনসাফের পথে আসতে হবে।”
সমালোচকদের প্রতি বার্তা:
নিজের একাধিক বিবাহের কথা স্বীকার করে কাশেমী বলেন- “আমাকে নিয়ে কেউ ৮-১০টা বিয়ে বলুক, এতে সমস্যা দেখি না। যারা নবী ও সাহাবাদের বিবাহ সংখ্যা নিয়ে বিদ্রূপ করে, তারা আসলে নাস্তিকদের সুরে সুর মিলাচ্ছে।” তিনি সতর্ক করেন, এমন মনোভাব ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ইসলামি ইতিহাস থেকে দূরে ঠেলে দিতে পারে।
আইডিয়াল ম্যারেজ ব্যুরো সম্পর্কে:
কাশেমী প্রতিষ্ঠিত Ideal Marriage Bureau-কে তিনি বলেছেন, “এটি কোনো সাধারণ ঘটক অফিস নয়, বরং উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত একটি বিশ্বস্ত প্ল্যাটফর্ম।” এখানে বিবাহ, তালাক ও দাম্পত্য জীবনের শরয়ী দিকনির্দেশনা এবং উপযুক্ত পাত্র-পাত্রী খোঁজার সহায়তা দেওয়া হয়।
উপসংহার:
একাধিক বিয়ে বা তালাক ইসলামি শরিয়তে নিষিদ্ধ নয়, তবে ইনসাফ ও ন্যায়বিচার অপরিহার্য। কাশেমীর বক্তব্য সমাজে বিতর্কের জন্ম দিলেও, ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে ন্যায়সঙ্গতভাবে একাধিক বিবাহ করা পাপ নয়।
FAQ (সাধারণ প্রশ্নোত্তর):
Q1: ইসলামে একাধিক বিবাহ বৈধ কি?
➡ হ্যাঁ, তবে একই সময়ে সর্বোচ্চ চারজন পর্যন্ত স্ত্রী রাখা বৈধ এবং ইনসাফ করতে হবে।
Q2: কাশেমী কেন একাধিক বিবাহের পক্ষে কথা বললেন?
➡ ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিতে ও ভুল ধারণা দূর করতেই তিনি বক্তব্য দেন।
Q3: এই বক্তব্যে বিতর্ক কেন?
➡ সমাজে একাধিক বিবাহ নিয়ে নেতিবাচক ধারণা থাকায়, অনেকেই বিষয়টি সমালোচনামূলকভাবে নিয়েছেন।
Q4: একাধিক বিয়ে করলে কি সমাজে সমস্যা হয় না?
➡ ইসলাম অনুযায়ী ইনসাফ ও দায়িত্ব পালন করলে সমস্যা নয়, বরং অন্যায় হল জুলুম বা অবিচার।
পোস্ট ট্যাগ:
মামুনুর রশিদ কাশেমী, একাধিক বিয়ে, ইসলামি বিবাহ, আদেল স্বামী, আইডিয়াল ম্যারেজ ব্যুরো, শরয়ী নির্দেশনা, মুসলিম বিবাহ, ইসলামে বিবাহ, তালাক, নারী নির্যাতন