বাংলাদেশে ফ্রি পাবলিক ওয়াইফাই জোন চালুর উদ্যোগ শুরু হয়েছে। পাইলট পর্যায়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে সেবা চালু করে ব্যবহারকারীদের জন্য নিরাপদ ও সহজ ইন্টারনেট অ্যাক্সেস নিশ্চিত করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে ইন্টারনেট এখন দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য একটি অংশ। শিক্ষা, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা, ব্যবসা কিংবা সরকারি সেবা—সব ক্ষেত্রেই নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ী ইন্টারনেট মানুষের জীবনে সরাসরি প্রভাব ফেলছে। তাই নাগরিকদের জন্য সহজলভ্য ইন্টারনেট নিশ্চিতে নতুন নতুন উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
এ ধারাবাহিকতায় দেশে ফ্রি পাবলিক ওয়াইফাই জোন চালুর একটি নতুন প্রকল্প চালু হয়েছে, যা নেওয়া হয়েছে বিএনপির ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি অফিসের পক্ষ থেকে। দলটির পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে “ইন্টারনেট সবার অধিকার” নীতিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়ে আসছে। সেই নীতির অংশ হিসেবেই দেশের বিভিন্ন স্থানে বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে এই ফ্রি ওয়াইফাই প্রকল্প শুরু হয়েছে।
পাইলট প্রকল্পের উদ্বোধন:
পাইলট হিসেবে প্রকল্পটি শুরু হয়েছে ঠাকুরগাঁও অঞ্চলে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার নির্বাচনী এলাকায় এ সেবার উদ্বোধন করেন। প্রথম পর্যায়ে পাঁচটি স্থানে ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবস্থা চালু করা হয়।
মাত্র ৩০ দিনের মধ্যে এসব স্থানে-
প্রায় ১৯ হাজারবার সংযোগ ব্যবহার হয়েছে, যা মোট ব্যবহার সময় ১৪ হাজার ঘণ্টার বেশি। স্থানীয় ব্যবহারকারীরা জানান, এই সেবা তাদের দৈনন্দিন কাজ সহজ করেছে এবং ইন্টারনেট খরচ কমাতে সহায়তা করছে।
ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহারের পদ্ধতি:
সেবাটি ব্যবহার করা খুব সহজ।
ব্যবহারকারীকে শুধু-
1. নির্দিষ্ট স্থানে থাকা QR কোড স্ক্যান করতে হবে
2. স্ক্যান করার পর এক ঘণ্টার জন্য বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে
3. প্রয়োজনে একই পদ্ধতি পুনরাবৃত্তি করে আবারও সেবা ব্যবহার করা যাবে
এই সরল ব্যবস্থাটি বিভিন্ন বয়স ও পেশার মানুষের জন্য সুবিধাজনক হয়ে উঠেছে।
প্রকল্পের লক্ষ্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো- দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষ যেন বিনামূল্যে, নিরাপদ এবং নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সুবিধা পায়।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে-
1. প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় ২০টি পর্যন্ত ফ্রি ওয়াইফাই জোন স্থাপন
2. শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ নাগরিকদের ডিজিটাল সেবা ব্যবহারের সুযোগ বাড়ানো
3. গ্রামীণ ও প্রান্তিক এলাকাতেও সহজলভ্য ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া
প্রকল্পের নেতৃত্বে আছেন বিএনপির তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান। পাশাপাশি সার্বিক তত্ত্বাবধানে কাজ করছেন আবির মজুমদার ও সাবির হোসাইন।
সম্ভাব্য সামাজিক প্রভাব-
বিনামূল্যে ইন্টারনেট সুবিধা শিক্ষার্থীদের অনলাইন লার্নিং, চাকরি খোঁজা, যোগাযোগ এবং উদ্যোক্তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমে বড় অবদান রাখতে পারে। বিশেষ করে যে এলাকায় নেটওয়ার্ক ব্যয় তুলনামূলক বেশি, সেখানে এই প্রকল্প ডিজিটাল ব্যবধান কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে।
উপসংহার:
ডিজিটাল সেবার ব্যবহার বাড়ানোর ক্ষেত্রে ফ্রি পাবলিক ওয়াইফাই জোন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। পাইলট প্রকল্পের সফলতা ইঙ্গিত দিচ্ছে, সেবা বিস্তৃত হলে আরও অনেকে উপকৃত হবেন। তবে পরিসর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডেটা সিকিউরিটি, নেটওয়ার্ক স্থিতিশীলতা এবং ব্যবহার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করাও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে।
FAQ:
১. ফ্রি ওয়াইফাই প্রকল্পটি কারা পরিচালনা করছে?
এই উদ্যোগটি বিএনপির ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি অফিস পরিচালনা করছে।
২. সেবা কীভাবে ব্যবহার করা যায়?
QR কোড স্ক্যান করার পর এক ঘণ্টার জন্য ফ্রি ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়।
৩. প্রকল্পটি কি সারা দেশে চালু হবে?
পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় ২০টি ফ্রি ওয়াইফাই জোন স্থাপনের লক্ষ্য রয়েছে।
৪. পাইলট প্রকল্প কোথায় চালু হয়েছে?
ঠাকুরগাঁও অঞ্চলে পাইলট চালু হয়েছে।
৫. প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য কী?
সবার জন্য সহজ, নিরাপদ এবং বিনামূল্যে ইন্টারনেট অ্যাক্সেস নিশ্চিত করা।
পোস্ট ট্যাগ:
ফ্রি পাবলিক ওয়াইফাই, বাংলাদেশ ফ্রি ইন্টারনেট, ওয়াইফাই জোন প্রকল্প, পাবলিক ওয়াইফাই বাংলাদেশ, ফ্রি ওয়াইফাই সেবা, ইন্টারনেট অ্যাক্সেস বাংলাদেশ, ডিজিটাল সেবা বাংলাদেশ, ওয়াইফাই পাইলট প্রকল্প, বিএনপি আইসিটি উদ্যোগ, ইন্টারনেট ব্যবহার বাংলাদেশ
